বিশেষ প্রতিনিধিঃ-
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গণমানুষের সাথে গণমাধ্যমের সম্পর্ক হোঁচট খেয়েছিল। জুলাই আগষ্টের ছাত্রজনতার আন্দোলনে পর বর্তমান সরকার সেই গণমাধ্যমকে গণমানুষের আস্থায় নেওয়ার জন্য কাজ করছে। তবে, কোন ব্যক্তি স্বার্থের দিকে না চেয়ে জাতীয় স্বার্থে সকল সাংবাদিককে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রোববার সকালে গুলশানের স্বদেশ প্রতিদিনের মিলনায়তনে দিনব্যাপী সাংবাদিক কর্মশালা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় সত্য উঠে আসবে। আপনারা সত্যের সঙ্গে থাকবেন। সত্য উদঘাটন করবেন। তাহলে মানুষ গণমাধ্যমে প্রতি আস্থা রাখবে। তিনি বলেন, পরিবেশ আন্দোলনে সব সময় বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা পাশে ছিল।
সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে অবশ্যই ফোকাস পয়েন্ট চিন্তা করবেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে রাসেল ভাইপার দিকে ফোকাস করা হয়। কিন্তু সেই রাসেল ভাইপারের নেপথ্যে অন্য স্বার্থ হাসিল করা হয়েছিল। কেননা, এরপর বন্যা হলেও রাসেল ভাইপারের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে বিভিন্ন সময় ফোকাস করা হয় এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিয়ে সরকার বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আগামী প্রজন্মের কাছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ হবে অন্যরকম। অথচ এই সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে বিভিন্ন গুজব রটে। আমাদের এধরনের ফোকাস থেকে সর্তক থাকতে হবে। যেন এই ফোকাসের আড়ালে অন্যকোন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন না হয়।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরেও মনোযোগী হলে হর্ন না বাজিয়েও গাড়ি চালানো সম্ভব। আপনি আপনার ড্রাইভারকে বলুন। আস্তে-ধীরে ড্রাইভারকে অভ্যস্ত করে তুলুন। অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজানো বন্ধ করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরেও মনোযোগী হলে হর্ন না বাজিয়েও গাড়ি চালানো সম্ভব। আজকের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন প্রজন্মকে তাদের পূর্বসূরীদের ভুল পুনরাবৃত্তি না করে প্রকৃতির প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং উন্নয়ন মডেলগুলো পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পুনর্গঠন করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং স্বদেশ প্রপার্টিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এম এ কাইয়ুম বলেছেন, গণমানুষের আস্থার পত্রিকা দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন। দেশের জাতীয় স্বার্থে সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। আগামীতেও দেশও জনগনের মূখপত্র হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, সারাদেশ থেকে যে সাংবাদিকগণ এসেছেন তাদেরকে স্বদেশ প্রতিদিনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ করবেন। তথ্য উপাত্ত যাচাই-বাচাই করে পাঠাবেন। পত্রিকাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য আপনাদেরকে আরো জোড়ালোভাবে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বদেশ প্রপার্টিসের পরিচালক রিয়াসাদ উদ্দিন, পরিচালক নাভিদ তানভীন অনন্ত, স্বদেশ প্রপার্টিসের সেলস এন্ড মার্কিটিংয়ের নির্বাহী পরিচালক ইশফাক হোসেন, বিজ্ঞাপন বিভাগের চৌধুরী ফাহিম আহমেদ প্রমুখ।
সম্মেলনে দুপুরের পর্বে বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য মেহেদী হাসান, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সদস্য সাদিক আরমান, ইমপ্যাক্ট ইনিশিয়েটিভ এর সিইও এনায়েত হোসেন জাকারিয়া প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. মজিবুর রহমান চৌধুরী।
কর্মশালায় প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন স্বনামধন্য সাংবাদিক ও লন্ডন প্রেস মিনিস্টার আকবর হোসেন, আল-জাজিরার সাংবাদিক তানভীর চৌধুরী, রয়টার্সের শ্যাম জাহান, ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক রেদোয়ান আহমেদ প্রমুখ।
সকালের পর্বে কর্মশালা উদ্বোধন করেন স্বদেশ প্রপার্টিসের নির্বাহী পরিচালক জেনারেল কর্নেল (অব.) মো. রকিবুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বদেশ প্রপার্টিসের পরিচালক নাভিদ তানভীন অনন্ত। কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করেন সারাদেশ থেকে আগত ব্যুরো প্রধান, জেলা ও উপজেলার শতাধিক প্রতিনিধিবৃন্দ। দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন, দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বাবলু, অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়ার এডিটর নাজমুল হক ও মনিরউজ্জামান প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন প্রশাসন শাখার ফাহিম শাহরিয়ার পল্লব।